রুদ্রজ ব্রাহ্মণ ভিজিট করার জন্য আপনাকে সুস্বাগতম

ধর্ম , সাহিত্য , কলা এবং শিক্ষা
আত্মজ্ঞান লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
আত্মজ্ঞান লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

সোমবার, ১৮ জুন, ২০১৮

Atmagyan আত্মজ্ঞান

নমস্কার বন্ধুগণ , আজকে আমি জীবদেহে আত্মার স্বরূপ নিয়ে আলোচনা করবো । আদি গুরু শঙ্করাচার্য্য তার রচিত তত্ত্ববোধ এবং আত্মবোধ গ্রন্থে আত্মার স্বরূপ বলতে বলেছেন আত্মা সৎ , চিৎ , আনন্দময় । তার যথাযথ ব্যাখ্যা আমি এখানে উপস্থাপন করলাম ।
প্রশ্ন :-আত্মা কঃ ? (আত্মা কি ?)
উ :- সচ্চিদানন্দস্বরূপঃ ( আত্মা সৎ , চিৎ তথা আনন্দ স্বরূপ )
সৎ কিম্ ? ( সৎ কি ? )
উ :- কালত্রয়েহপি তিষ্ঠতীতি সৎ ( যা তিন কালেই সমানভাবে একরস থাকে তাই সৎ )
অর্থাৎ যা অতীত , বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ এই তিনকালেই সমানরূপে একরস থাকে , যার জন্ম নেই , মৃত্যু নেই , যার বৃদ্ধি নেই , ক্ষয় নেই , যার রূপের পরিবর্তন হয় না , যার কোনও বিকার নেই এবং যা পূর্ণ , নানা প্রকার সৃষ্টি নির্মাণের পরেও যার পূর্ণতার হ্রাস হয় না এমন সর্বদা পূর্ণ তত্ত্বকে সৎ বলা হয় । শরীরের অন্য সবকিছুই মিথ্যা যার কোনও স্থায়িত্ব নেই । একমাত্র আত্মার স্থায়িত্ব থাকায় আত্মাকে ' সৎ ' বলা হয় ।
এবার প্রশ্ন চিৎ কিম্ ? ( চিৎ কি ? )
উত্তর :- জ্ঞানস্বরূপঃ ( জ্ঞান স্বরূপই চিৎ )
ব্যাখ্যা :- এই সম্পূর্ণ সৃষ্টিতে একমাত্র চেতন (চিৎ) তত্ত্বকে জ্ঞান স্বরূপ বলা হয় । চেতন শক্তি দ্বারাই সবকিছু জানা যায় । জড় প্রকৃতিতে জ্ঞান হয় না তাই তার দ্বারা কিছুই জানা যায় না ।  দেখা , জানা ও অনুভব করা প্রভৃতি কার্য্য চেতন (চিৎ) তত্ত্বই করে থাকে । শরীরের মধ্যে সেই চেতন তত্ত্বকে আত্মা বলা হয় । বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সমস্ত পদার্থ চেতন তত্ত্বের দ্বারাই চেনা যায় , জানা যায় , দেখা যায় সুতরাং চেতন তত্ত্বই একমাত্র দ্রষ্টা । অন্য কিছুতেই দেখার শক্তি নেই তাই আত্মাই (চেতন তত্ত্বই) জ্ঞানস্বরূপ । জ্ঞান চেতনার গুণ , জড় পদার্থের নয় । তাই আত্মা চৈতন্য (চিৎ) স্বরূপ যা আত্মার দ্বিতীয় গুণ ।
এবার তৃতীয় গুণ আনন্দের নিমিত্য প্রশ্ন - আনন্দঃ কঃ? ( আনন্দ কি ?)
উত্তরে জগৎগুরু আদি শঙ্করাচার্য্য বলছেন - সুখস্বরূপঃ ( সুখ স্বরূপই আনন্দ )
ব্যাখ্যা :- এই সৃষ্টিতে আত্মাই একমাত্র শুদ্ধ , নির্বিকার , সৎ , চিৎ এবং আনন্দ তত্ত্ব বলে বিবেচিত । আত্মাই জ্ঞান স্বরূপ । অন্য সকলকিছু জড় প্রকৃতি দ্বারা নির্মিত যা অসত্য , অশুদ্ধ , জড় , বিকার লভ্য এবং দুঃখ স্বরূপ । আত্মজ্ঞানের অভাবে যখন মানুষ জড় প্রকৃতিকে অথবা শরীর , মন , আদিকে নিজের স্বরূপ বলে জ্ঞান করে থাকে তখন সে দুঃখের কারণ হয়ে যায় । আবার যখন মানুষ এইসব অজ্ঞান তথা ভ্রান্তিকে দূর করে পুনরায় আত্মাকে নিজের স্বরূপ বলে মেনে নেয় , তখন সে সকল প্রকার দুঃখকে দূর করে পরমানন্দ  বোধ করে থাকে । এটাই মানুষের জ্ঞানাবস্থা , যাকে প্রাপ্ত করে মনুষ্য সমস্ত প্রকার রোগ , শোক , দুঃখ , ক্লেশ , সন্তাপ ইত্যাদি থেকে মুক্ত হয়ে যায় । সে আনন্দ সাগরে নিমগ্ন থাকে , তার শাশ্বত সুখের অনুভূতি হয় । সে সকল প্রকার সাংসারিক দ্বন্দ্ব অতিক্রম করে থাকে কারণ আত্মা দ্বন্দ্বরহিত , সুখস্বরূপ এবং আনন্দস্বরূপ । যতক্ষণ মানুষ প্রকৃতিকে নিজের স্বরূপ মানতে থাকবে ততক্ষণ সে কখনই দুঃখ থেকে মুক্ত হতে পারবে না । আত্মজ্ঞানই পরম সুখের একমাত্র উপায় ।
ওঁ নমঃ শিবায় , হর হর মহাদেব ।

উপনিষদ্ পরিচয় UPANISHAD PARICHAY

প্রিয় পাঠক আপনাদের সবাইকে নমস্কার জানিয়ে শুরু করছি আলোচ্য বিষয় উপনিষদ্ পরিচয় । উপনিষদ হিন্দু ধর্মের মহত্ত্বপূর্ণ ধর্মগ্রন্থ । যা ব...